অবস্থান:
টাঙ্গাইল জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পাড়দিঘুলিয়া মৌজার কলেজপাড়া এলাকায় অবস্থিত। উত্তরে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা ভুমি অফিস ও স্টেডিয়াম রোড, দক্ষিণে টাঙ্গাইল ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফিস ও পার্ক বাজার রোড, পূর্বে টাঙ্গাইল পৌরসভা ভবন, সোনালি ব্যাংক লিমিটেড, টাঙ্গাইল আঞ্চলিক অফিস ও টাঙ্গাইল শাখা, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও জেলা সদর রোড, পশ্চিমে মডেল প্রাইমারী স্কুল ও স্ট্যান্ড রোড ।
প্রতিষ্ঠাকাল: ০৩ এপ্রিল, ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দ।
জাতীয়করণ: ০১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ।
প্রতিষ্ঠা ও নামকরণ:
প্রমথ নাথরায় চৌধুরী |
৩ এপ্রিল, ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে কতিপয় শিক্ষানুরাগী ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী টাঙ্গাইলের বর্তমান পূর্ব আদালত পাড়ায় পরিচালিত একটি মাইনর স্কুলকে হাই স্কুলে উন্নীত করেন এবং ময়মনসিংহ জেলার তদানীন্তন জেলা প্রশাসক গ্রাহাম সাহেবের নামে গ্রাহাম ইংলিশ হাই স্কুল নামকরণ করেন। প্রায় তিন বছর বিদ্যালয়টি অর্থসংকটের ভেতর দিয়ে পরিচালিত হয়। গ্রাহাম ইংলিশ হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ আর্থিক সুবিধার জন্য টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর কীর্তিমান জমিদার মরহুম নবাব বাহাদুর নওয়াব আলী চৌধুরী সাহেবের হাতে স্কুলটি অর্পণ করেন। তিনি প্রায় দুই বছর এই স্কুল পরিচালনার ব্যয়ভার বহন করেন।
মন্মথ নাথরায় চৌধুরী |
তৎপর টাঙ্গাইলের সন্তোষের পাঁচ আনা অংশের জমিদার অন্যতম ভূমাধ্যিকারিণী বিন্দুবাসিনী চৌধুরানী বিদ্যালয় পরিচালনার যাবতীয় ব্যয়ভার গ্রহণ করেন এবং তাঁর নামানুসারে বিদ্যালয়টি বিন্দুবাসিনী হাই স্কুল নামে নামকরণ করেন । তাঁর সুদক্ষ পরিচালনায় ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত এন্ট্রান্স পরীক্ষায় অত্র বিদ্যালয় হতে প্রথমবার অংশ নেওয়া ২০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৪ জন প্রথম বিভাগে এবং ০৬ জন দ্বিতীয় বিভাগে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। এতে সন্তুষ্ট হয়ে টাঙ্গাইলের সন্তোষের পাঁচ আনা অংশের জমিদার ভাতৃদ্বয় প্রমথনাথ রায় চৌধুরী ও মন্মথনাথ রায় চৌধুরী তাঁদের মাতা বিন্দুবাসিনী চৌধুরানীর নামে প্রতিষ্ঠিত বিন্দুবাসিনী হাই স্কুল বরাবর বর্তমান বিদ্যালয়, ছাত্রাবাস, পৌর উদ্যান ও স্থাপনাসহ অন্যান্য কতক ভূমি বিদ্যলয়ের নামে দান করেন । ১৯১০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি এ বিদ্যালয়ের ব্যয়ভার বহন করেন এবং ঐ সনে তা ট্রাস্ট সম্পত্তি রূপে সমর্পণ করেন। ৩১ জানুয়ারি ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মহকুমা প্রশাসক/জেলা প্রশাসককে প্রধান করে গঠিত বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে বিদ্যালয়টি সরকারের অর্থ সাহায্যে পরিচালিত হয়ে আসছিল । ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পাক-ভারত উপমহাদেশ তথা সারা বিশ্বে শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে আসছে। সন্তোষের জমিদার বিন্দুবাসিনী চৌধুরানী, জমিদার ভ্রাতৃদ্বয় প্রমথনাথ রায় চৌধুরী ও মন্মথনাথ রায় চৌধুরীসহ যে সব মহানুভব দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তি সেই তমসাচ্ছন্ন যুগে ইংরেজি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তাঁরা স্মরনীয়, সম্মানীয়। কৃতজ্ঞচিত্তে আমরা আজ তাঁদের স্মরণ করছি।