ক্রঃনং |
নাম |
শিাগত যোগ্যতা |
হইতে |
পর্যন্ত |
১। |
শ্রী গোবিন্দ চন্দ্র নিয়োগী |
আন্ডার গ্রাজুয়েট |
০৩-০৪-১৮৮০ |
৩১-১২-১৯০৯ |
যোগেন্দ্র চন্দ্র চক্রবর্তী ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার অন্তর্গত দেওয়াজানী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালেই পিতা মহেশ চন্দ্র পরলোকগমন করেন। তিনি জামুর্কীর সেরেস্তার কর্মচারী ছিলেন।
টাঙ্গাইলের শহরের আকুর টাকুর পাড়ায় মাতুলালয় থেকে তৎকালীন গ্রাহাম স্কুল (পরবর্তী বিন্দুবাসিনী স্কুল) থেকে ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে এন্ট্রান্স পাশ করেন। তারপর কুচবিহার কলেজ থেকে ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে এফ. এ এবং ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বি. এ পাশ করেন। এরপর ইংরেজিতে এম. এ দেন কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে।
এরপর সাংসারিক প্রয়োজনে ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে কুচবিহারে দিনহাটা হাই স্কুলে শিকতা শুরু করেন । দুই বছর সেখানে শিকতা করার পর বিন্দুবাসিনী হাই স্কুলের তদানিন্তন প্রধান শিক এবং শিাগুরু গোবিন্দ চন্দ্র নিয়োগী মহাশয়ের আহ্বানে বিন্দুবাসিনী হাই স্কুলে সহকারী শিক রূপে যোগদান করেন। গোবিন্দ চন্দ্র নিয়োগী মহাশয়ের অবসর গ্রহণের পরে তিনিই প্রধান শিক পদে অধিষ্ঠিত হন। সেই থেকে দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দী কাল তিনি এই স্কুলের প্রধান শিক ছিলেন। তাঁর সংগঠন পটুতা, শিাদানে নিষ্ঠা এবং সর্বোপরি অপূর্ব শৃঙ্খলাবোধ দ্বারা এ স্কুলটিকে এ অঞ্চলে প্রথম সারির শিায়তনে পরিণত করেন। ছাত্রদরদী শিকরূপেও তাঁর যথেষ্ট পরিচিতি ছিল। স্কুল তহবিল থেকে বা ব্যক্তিগতভাবে কত দুঃস্থ ছাত্রের পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছেন তা ছাত্ররাই জানেন।
শিকতা ছাড়াও তাঁর কর্মপ্রতিভা টাঙ্গাইল শহরের নানা উদ্যোগের সাথে জড়িত ছিলেন। টাঙ্গাইল ইন্টার স্কুল সমিতির মহাসচিব রূপে দীর্ঘদিন এ মহুকুমার শিা সংগঠনের কাজে তিনি জড়িত ছিলেন। সংস্কৃত শিা পরিষদের তিনি সম্পাদক ছিলেন। বিন্দুবাসিনী বালিকা বিদ্যালয় বলতে গেলে তাঁরই হাতে সৃষ্টি। দীর্ঘকাল বিশেষ যোগ্যতার সাথে প্রথম শ্রেণীর অনারারী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন। টাঙ্গাইল কো-অপারেটিভ শুল্ক এবং অন্য বহু জনহিতকর প্রতিষ্ঠানের সাথে তিনি যুক্ত ছিলেন।
প্রচণ্ড নীতিবোধ এবং চারিত্রিক দৃঢ়তার জন্য জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে তিনি সকলের শ্রদ্ধা লাভ করেছিলেন। অর্ধ শতাব্দীকাল সুদীর্ঘ শিকজীবন থেকে তিনি ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন। তখন তাঁর বয়স ৭৪ বছর।
জীবন সায়াহ্নে নিজের ছেলেমেয়েদের সাথে বাকী জীবনটা কাটাবেন বলে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিম বাংলায় চলে যান। কলকাতার উপকণ্ঠে ২৪ পরগনা জেলার খড়দহ থানার অন্তর্গত বহড়া গ্রামে বসবাস করতে থাকেন। ২৯ মার্চ ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে ৮৮ বৎসর বয়সে তিনি মহাপ্রয়াণ করেন। তাঁর মহাপ্রয়াণের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের কিছু পত্র-পত্রিকায় তাঁর স্মরণে কিছু সংপ্তি তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল।
আদর্শ শিকরূপে তাঁর আভিজাত্যপূর্ণ উন্নত চেহারায়, দৃপ্ত কণ্ঠস্বরে এবং সর্বোপরি মাধুর্যমণ্ডিত ব্যক্তিত্বের জন্য এ উপমহাদেশের অগণিত ছাত্রের হৃদয়ে তিনি এখনও বেঁচে আছেন। এদের মাঝেই তাঁর যোগ্যতার প্রকৃত মূল্যায়ন। এন্ট্রান্স পরীা পাশ করার পরই তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর শ্বশুর মহাশয়ও ছিলেন গ্রাহাম স্কুলের (পরবর্তী কালে বিন্দুবাসিনী স্কুল) প্রধান শিক। তখন ছিল প্রাইমারী স্কুল। তাঁর পাঁচ পুত্র ও ছয় কন্যা। পুত্রদের মধ্যে এখন জীবিত তিনজন। জ্যেষ্ঠ পুত্র ডাঃ নৃপেন্দ্র চক্রবর্তী। তিনি টাঙ্গাইলে ডাক্তারী করতেন। কিছুকাল বিন্দুবাসিনী স্কুলে স্বাস্থ্য শিক ও স্বাস্থ্য পরীক ছিলেন। তাঁর বয়স এখন ৭৫। কলিকাতার দণিাঞ্চলে নিজস্ব বাড়িতে আছেন। দ্বিতীয় পুত্র হীরেন্দ্র চক্রবর্তী বিন্দুবাসিনী স্কুলেরই শিক ছিলেন। ১৯৭৭ সালে স্বল্পরোগ ভোগের পর ৬৩ বছর বয়সে ঢাকায় পরলোক গমন করেন। তাঁর স্ত্রী ও তিন কন্যা বাংলাদেশেই আছেন। তৃতীয় পুত্র- ধীরেন্দ্র চক্রবর্তী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মচারী ছিলেন। ১৯৮২ সালে পরলোক গমন করেছেন। চতুর্থ পুত্র নীরেন্দ্র চক্রবর্তী ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী ছিলেন। অবসর গ্রহণ করে সম্প্রতি বহড়ার পৈত্রিকগৃহে বাস করেন। পঞ্চম পুত্র শীতেন চক্রবর্তী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিা বিভাগে উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। সম্প্রতি অবসর গ্রহণ করেছেন। পুত্রদের মধ্যে তিনিই বিশেষ কৃতী। জ্যেষ্ঠা কন্যার জামাতা প্রয়াত িিতশ চন্দ্র বিশ্বাস বিন্দুবাসিনী স্কুলেরই কৃতী শিক ছিলেন। কনিষ্ঠা কন্যা অনার্সসহ øাতক, এক বিদেশী সমাজসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তাঁর স্বামী মির্জাপুর ভারতেশ্বরী হোমস-এর সঙ্গীত শিক।